নবীন ক্যাম্পাসিয়ানের অভীজ্ঞতার কথা!!.....
![]() |
Night View of Campus |
ভর্তি পরীক্ষার পর পরই জীবনের অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলো বাবা-মা। ভার্সিটিতে ভর্তি হবো নাকি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে!!
কি যেনো ভেবে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে যে কারো ১০০ একরের বড় বড় দালান সমৃদ্ধ ভার্সিটিকে পছন্দ করার কথা।
জীবনটা উপভোগ করবো, কারো হাত ধরে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াবো, টং দোকানে চায়ের আড্ডা, হঠাৎ করে কুয়াকাটা টুর এসব করবো তা না করে এই কলেজে আসলাম।
সব বন্ধুরা ভার্সিটিতে পড়ে। আমি কাউকে বোঝাতেই পারছি না আমি ভার্সিটি লেভেলের ছাত্র৷
একটা সময় ডিপ্রেশন এসে গেলো। কোনো ভুল করলাম নাতো ?!!
আবার নিজেই বুঝায় নিজেকে আরে ৪ বছর পর আমাকে সবাই ইঞ্জিনিয়ার বলবে সারসটেকের ছাত্র বলে ছোট করার সাহসও পাবে না।
ক্যাম্পাস লাইফ শুরু হলো....
আমার ক্যাম্পাসে অত বড় বড় দালান নেই। ভার্সিটির মতো ওতো বড় ক্যান্টিন নেই। কিন্তু কেমন যেনো একটা ভালোবাসা আছে এই ক্যাম্পাসে।
আমার মনে হয় ভালোবাসা দিয়ে চলে এই ক্যাম্পাস।
আমি কলেজ লাইফ থেকেই বাড়ির বাইরে তাই বেশি খারাপ লাগে নি আমার। আর চাইলেই বাড়ি যেতে পারি। বাসে উঠে ১ ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারলেই বাড়ির গেটে থামবে বাস। কিন্তু খারাপটা লাগতো যারা সুদূর চট্রগ্রাম, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, বাগেরহাট, রংপুর সহ বাংলাদেশর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ গুলোর। তার উপরে প্রথম দিকে ইমিডিয়েট সিনিয়রদের হাক-ডাক! আতঙ্ক কাজ করেছে কিছুদিন৷ কিন্তু সে আতঙ্ক আর বেশিদিন টিকলো না। বড় ভাই দের সাথে বন্ধু সুলভ সম্পর্ক হয়ে গেলো খুব তাড়াতাড়ি।
একের পর এক নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হতে লাগল। সারাদিন ক্লাস করে বিকালে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে অসহ্য খাওয়া-দাওয়া।
তবে আমাদের ক্যাম্পাসে সবাই খুব আমোদী। অনেকগুলো সংগঠন আছে এই ক্যাম্পাসে।
★আপনার মন ভালো নেই?
- সোজা উচ্ছ্বাসের রুমে ঢুকে পরুন। গান-বাজনা, আনন্দে আপনার মন ভাল হয়ে যাবে।
★গরীব দুখীদের পাশে দাঁড়াতে চান?
-প্রয়াসে যোগ দিন।
★বিতর্ক করার বা শেখার শখ বা অভ্যাস আছে?
- সারসটেক ডিবেটিং সোসাইটিতে চলে আসেন।
★ছবি তুলতে ভালোবাসেন?
- সারসটেক মিডিয়া এন্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটির গ্রুপে যোগ দিন আর ছবি আপলোড করুন।
★ লেখালেখি পছন্দ আপনার?
- আমার মতো সুঁই-সুতোর ওয়েবসাইটে ঘুরে আসুন আর আপনার পছন্দের লেখা সবমিট করুন।
এভাবো আরো অনেকগুলো সংগঠন আছে যেগুলো আপনাকে প্রকাশিত করবে।
সবশেষ যদি প্রচন্ড ডিপ্রেশনে থাকেন মসজিদে গিয়ে দু-রাকাত নামাজ পড়ে আসুন ডিপ্রেশন কেটে যাবে।
দিন যতই যাচ্ছে ক্যাম্পাসের প্রতি ভালোবাসা বাড়ছে, সিনিয়র ভাইয়া-আপুদের সাথে সম্পর্ক ভালো হচ্ছে।
সারসটেক আসলে এমন একটা ক্যাম্পাস যেখানে সবাই স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলে দিনের পর দিন। আশে পাশে যা থাকে তাই নিয়ে স্বপ্ন বুনতে থাকে যেমন সুতা থেকে নিখুঁত হাতে কাপড় তৈরী হয় আর মনের মাধুরী মিশিয়ে সেই স্বপ্নকে রঙিনও করতে যানে সবাই। এই ক্যাম্পাসের প্রান, অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এরকম একদল তরুন প্রজন্ম কাজ করে যাচ্ছে আশীর্বাদের মতো। এক একজন ভবিষ্যতে দেশের কর্ণধর হবে আশা করি।
ব্যাচমেটরা অসাধারণ সবাই। ৬৪ জেলার ১১৭ জন বেশ প্রাচুর্যতা দেখা যায়। কথা বার্তা চালফেরা। অসাধারণ সবাই। বান্ধবীরা সংখ্যায় কম হলেও বন্ধুসুলভ। সবার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা।
অনেক উপদেশ পেয়েছি, আদেশ পেয়েছি, শাসনও পেয়েছি। অনেকে পড়াশোনার উপদেশ দেয়, কেউবা বলে তোর যে প্রতিভা আছে সেটা তুলে ধর। কেউবা বলে সিনিয়রদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখ। সবগুলোই দরকার। বড় ভাইদের অনেক আদর পেয়েছি। আন্তরিকতা দেখেছি। ভালো লাগে এরকম সিনিয়র থাকলে।
ভালোই যাচ্ছে ক্যাম্পাস লাইফ।
ভাইভা, ক্লাসটেস্ট, প্রাকটিক্যাল, সেমিস্টার ফাইনাল নিয়ে চলছে জীবন৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বা আর প্যারা নিবা না এটা হয় নাকি!!
একটা আশা তো আছেই দিনশেষে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি।
এভাবেই যাচ্ছে জীবন। এইতো জুনিয়র আসার সময় হয়েছে ভাবছি অনেক আদর সোহাগ দিয়ে একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে দেবো ওদের,পড়াশোনা কর একমাত্র সিজিপিএ ই তোর সাথে থাকবে।❤
ভাইভা, ক্লাসটেস্ট, প্রাকটিক্যাল, সেমিস্টার ফাইনাল নিয়ে চলছে জীবন৷ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বা আর প্যারা নিবা না এটা হয় নাকি!!
একটা আশা তো আছেই দিনশেষে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি।
এভাবেই যাচ্ছে জীবন। এইতো জুনিয়র আসার সময় হয়েছে ভাবছি অনেক আদর সোহাগ দিয়ে একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে দেবো ওদের,পড়াশোনা কর একমাত্র সিজিপিএ ই তোর সাথে থাকবে।❤
রাব্বি ইসলাম
নবম ব্যাচ(ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং)
No comments